দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ছেলের ফিরে আসার অপেক্ষায় চোখের পানি ফেলছেন গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনির বৃদ্ধ বাবা শেখ আবদুর রাশেদ। সে সময় জনির বয়স ছিল ২৭। ছেলেকে ফেরত পেতে এবং তাঁর গুমে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে আদালতে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত আবদুর রাশেদ। কিন্তু কোথাও কোনো আশার আলো দেখছেন না তিনি। ছেলেকে ফেরত পাওয়ার আশায় আজও দিন গুনছেন।
আজ শনিবার গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে খুলনায় মানববন্ধনে অংশ নিয়ে গুমের শিকার মোখলেসুরের বাবা শেখ আবদুর রাশেদ ছেলেকে ফেরত পেতে সরকারের কাছে সহায়তা চান।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ নগরের মানববন্ধনের করে। এর আগে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে তাদের একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়ে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে শেখ আবদুর রাশেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এক এসআইয়ের নেতৃত্বে পুলিশ মোখলেসুরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৯ বছরেও তাঁর সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। ছেলেকে হারিয়ে তাঁদের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। মোখলেসুরের মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি অভিযুক্ত সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন ওসি ও এক এসআইসহ গুমে জড়িত অন্য পুলিশ সদস্যদের শাস্তি এবং মোখলেসুরকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গুম মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্বাধীন দেশে এমন কথা ছিল না যে গুমের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে, জনগণকে সংগঠিত করতে হবে। বক্তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও গুম থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।
অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সভাপতিত্ব করেন অধিকারের খুলনার ফোকাল পারসন মুহাম্মদ নূরুজ্জামান। দিবসের বিবৃতি পাঠ করেন মানবাধিকারকর্মী কে এম জিয়াউস সাদাত।
মানববন্ধনে বক্তৃতা দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসচিব নুরুল হাসান, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নাগরিক ঐক্যের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী মোতাহার রহমান, ইসলামী আন্দোলনের খুলনার সহসভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক এম হুমায়ুন কবির, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনার সংগঠক আহম্মদ হামিম রাহাত, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (এমইউজে) খুলনার কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা প্রমুখ।